বোয়ালমারী( ফরিদপুর)থেকে এমএম জামান. | শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২০
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাড়ইপাড়ায় পুর্বশত্রুতার জেরধরে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের মৃত লাল মিয়ার পুত্র ইকরাম মিয়ার (৬০) নির্দেশে শতাধিক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা ।
থানা ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অলিয়ার রহমান মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য হিঙ্গুল মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গ্রামবাসি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে অলিয়ারে ভাই ইকরাম মিয়া ও তার ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২৬) মহিষারঘোপ বাজার থেকে রাতে মোটরসাইক যোগে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ইপাড়া হামিদ সরদারের বাড়ির নিকট তাদের পথ গতিরোধ করে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে পিতাপুত্র মারাত্মক আহত হন।
এর জের ধরে শুক্রবার সকালে প্রতিপক্ষের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় ইকরামের লোকজন। এ হামলায় বাদ যায়নি অসহায়া বেবি বেগমকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহার- সরকারি ঘরও। বেবি বেগমের ঘরের জিনিশ পত্র, চালডাল, রান্নার হাড়ি পাতিলও লুট করে নিয়ে যায় ইকরামের লোকজন। এসময় বেবি বেগমের পুত্রবধূ সুরাইয়া বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে লুটপাটকারীরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করাসহ তার স্বর্ণালংকার জোরকরে ছিনিয়ে নেয়।
আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সুরাইয়া জানান শুক্রবার সকালে অতর্কিত প্রায় শতাধিক ব্যক্তি একযোগে হামলা চালায়, তারা লাঠিসোঁটা, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘরের বেড়া সহ সবকিছু ভাঙচুর করতে থাকে এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায় ও লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাকে বেধড়ক পিটাতে থাকে। নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড়িয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ীতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ি।
ক্ষতিগ্রস্থ অপর বাড়ির মালিক জয়েন উদ্দিন ফকিরের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪২) বলেন, ইকরাম গ্রুপের লোকজন আমাদের উপর সন্দেহ বশবর্তী হয়ে বাড়িসহ চারটি ঘর ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা জড়িত নই।
একই গ্রামের মোকাদ্দেস সরদারের ছেলে মোহাম্মদ বাদসা সরদারের ৩টি ঘর ভাঙচুর ও মূল্যবান জিনিশ পত্র লুটকরে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। কালাই শেখের ছেলে ইমান শেখের তিনটি ঘরসহ আরও তিনটি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটতারাজের চালায়। হামলাকারীদের ভয়ে এসব বাড়িতে গিয়ে কোন পুরুষকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইমান শেখ ও ইকরাম মিয়ার বাড়ি পাশা-পাশি হওয়ায় এ বাড়িতে নারী ও শিশু কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে বাড়িটিতে ব্যাপক ভাংচুর পরিলক্ষিত হয়।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করীম জানান, বাড়িঘর ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য ৫জনকে আটক করা হয়েছে। দু পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২টি মামলা নেওয়া হয়েছে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি