কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০
কক্সবাজার জেলাব্যাপী বহুল আলোচিত গত ৮ অক্টোবর ঈদগাঁহ ঈদগড় সড়কের হিমছড়ী ঢালায় সিএনজি যোগে বাড়ী ফেরার পথে একদল মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত দলের হাতে খুন হওয়া জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জনি দে’র খুনের সাথে জড়িত কাউকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে জনি দে’র পরিবারের পক্ষ থেকেও থানায় দায়ের করা হয়নি কোন অভিযোগ কিংবা মামলা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ শেখ মনিরুল গীয়াস জানিয়েছেন,সংগীত শিল্পী জনি দে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টীম মাঠে কাজ করছে এবং আজকের মধ্যেই এ ব্যাপারে থানায় মামলা রজু করা হবে।
থানার ওসি (তদন্ত ) বিপুল চন্দ্র বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে জড়িতদের খুঁজে বের করার জোর চেষ্টা চলছে এবং এজাহার দায়ের করার জন্য বাদীর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জনি দে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের ধরার জন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যা বও কাজ করছে। এদিকে সংগীত শিল্পী জনি দে কে ডাকাতদল কেন নির্মমভাবে খুন করলো এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।এলাকাবাসীর মতে, প্রয়াত জনি ছিল একজন অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, নম্র এবং শান্তশিষ্ট প্রকৃতির ছেলে। বয়সে বড়দের জনি আংকেল বলে সম্বোধন করতেন। গান গেয়ে দর্শকদের হৃদয়মন জয় করে নেয়া সংগীত শিল্পী জনির এ নির্মম হত্যাকান্ড সম্পর্কে হিসাব মিলাতে পারছেননা এলাকার অনেকেই।
ঈদগড় বাজারের ব্যবসায়ী জানে আলমের মতে ডাকাত দল যখন সিএনজিতে হানা দেয় তখন শিল্পী জনি হয়ত ডাকাতদের আংকেল বলে সম্বোধন করেছিল। জনি ডাকাতদের চিনে ফেলেছে ভেবে ডাকাতেরা হয়ত তাকে খুন করে থাকতে পারে। ঈদগড় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দাবী খুন হওয়া জনির কোন শত্রু ছিল একথা তাদের জানা নেই।
ছেলে জনি হত্যাকান্ড সম্পর্কে তার পিতা তপন দে’র নিকট জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজী হননি। তবে গত ৯ অক্টোবর সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল জনির পরিবারকে সাত্বনা দিতে তার বাসায় যান বলে জানান।এদিকে ছেলে হারিয়ে জনির মা শান্তি বালার বিলাপে ঈদগড়ের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। শান্তি বালার দাবী তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনের নিকট ছেলে হত্যার বিচার দাবী করেন।
এদিকে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জনি যে কলেজে অধ্যয়নরত ছিল সেই ঈদগাঁহ ফরিদ আহমদ কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১০ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০ টায় ঈদগাঁহ বাসস্টেশন চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
ঈদগাহ সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু হেনা বিশাদের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রলীগ নেতা কাজী আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্টিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক হামিদুল হক ও জাহাঙ্গীর আলমসহ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সভায় বক্তারা জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী ও কলেজ ছাত্র জনিদে হত্যাকান্ডে জড়িতদের আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
এর আগের দিন ৯ অক্টোবরও ঈদগড় বাজারে জনি হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এতে বক্তব্য বক্তব্য রাখেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা ডাকাতি রোধে একটি বিজিবির ক্যাম্প স্থাপন ও জনি দে হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান। পরে সাংসদ সংগীত শিল্পী জনির বাড়ীতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাত্বনা দেন।
Posted ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি