নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১
কর্মদক্ষতার মূল্যায়নে প্রশংসিত হলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুল হক। ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় পাঁচ উপজেলার এসিল্যান্ডের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এসিল্যান্ড নির্বাচিত হন। জেলা রাজস্ব সম্মেলনে শ্রেষ্ঠতার বিশেষ স্বীকৃতি হিসেবে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন জেলা প্রশাসক ড.সাবিনা ইয়াসমিন।
বিশ্বব্যাপি মহামারী করোনা প্রকোপ দিয়ে শুরু হয় ২০২০ সাল। মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে এ কর্মকর্তা ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধা হয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, লকডাউন নিশ্চিতকরণ, করোনা প্রতিরোধে মাস্ক নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও মাদক প্রতিরোধে অভিযান, জুয়া, বাল্যবিয়ে-ইভটিজিং বন্ধ, দ্রব্য মূল্য ও ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় ব্যাপক কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি)র দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ছয় মাসেরও বেশি দায়িত্ব পালন করেন। এসময় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করার পাশাপাশি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গত একবছরে ১৩৮ টি মোবাইল কোর্টে ৩৭৫টি বিভিন্ন মামলায় ৩৭৫ জনকে দন্ড প্রদান করেন তিনি।
২ জুলাই ২০১৯ সালে তেঁতুলিয়ায় সহকারি কমিশনার (ভূমি)-দপ্তরে যোগদান করেন মাসুদুল হক। যোগদানের পর থেকেই কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে ভূমি সেবায় এনেছেন পরিবর্তন। অফিসকক্ষ বৃদ্ধি করণ, অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধন (ইন্টেরিয়র ডিজাইন) সহ প্রবেশপথের সিড়ির আধুনিকায়নে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছেন ভূমি কার্যালয়। সৌন্দর্যবর্ধন করেছেন সেবা গ্রহীতাদের বসার স্থানও। প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে জনগণ যাতে নির্ভয়ে মন খুলে কথা বলতে পারে তৈরি করেছেন সেতুবন্ধন। কোন সেবাগ্রহীতা সেবা নিতে এসে কোন প্রকার দালালদের খপ্পরে না পরে সেটিও নিশ্চিত করেছেন এই কর্মকর্তা।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রত্যেক ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিসে উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা, প্রতিটি অফিসের নামজারি সহকারী, ইউনয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা/উপ-সহকারী কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, নাজির কাম-ক্যাশিয়ারসহ সকল কর্মচারীকে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের উদ্যোগে উন্নতমানের ল্যাপটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার সরবরাহ ব্যবস্থা করেছেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে এখন সেবা গ্রহিতারা অল্প সময়ে ও কম খরচে সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। অফিস ও রেকর্ড রুমের সার্বিক নিরাপত্তায় বসিয়েছেন সিসি টিভি ক্যামেরা।
সেবাগ্রহিতারা এখন পূর্বে মিউটেশনে ৪৫ সেবা কার্যদিবসের অপেক্ষার বদলে ২৮ দিনের মধ্যেই কম শ্রমে ই-নামজারি করতে সক্ষম হচ্ছেন। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ই- নামজারির শুনানি গ্রহন করে সরকার নির্ধারিত ফি-তেই মিলছে জমির খতিয়ান ও ডিসিআর। এসএমএস এর মাধ্যমে মিলছে তথ্য। শুনানির দিন অফিসে একবার হাজির হয়ে শুনানি শেষে ২০ মিনিটের মধ্যে অনুমোদিত নামজারির সরকার নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক খতিয়ান ও ডিসিআর পেয়ে যাচ্ছেন সহজেই। আর প্রবাসীরা জরুরী ক্ষেত্রে কিছু কিছু মামলা ০৭ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি সেবা পাচ্ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ১০ (দশ) দিনের নিস্পত্তি করা হচ্ছে। এছাড়াও বিগত অর্থ বছরে ৪৫টি ভূমিহীন পরিবারকে ভূমি বন্দোবস্তসহ চলমান মুজিব বর্ষে ১৫২ জন ভূমিহীন-গৃহহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রায় তিন একর কৃষি খাস জমি উদ্ধার ও চিহ্নিত করেছেন এ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মাসুদুল হক বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে সর্বদা জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন ও জনগণের দোরগোড়ায় ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি। গত ২০২০ সালে আমার কর্মদক্ষতার মূল্যায়ন করায় আরও কাজের স্পৃহা বেড়ে গেল। এজন্য জেলা প্রশাসক স্যার প্রতি কৃতজ্ঞতা। পুরস্কারের আশা নয়; জনগণের সেবা দেয়া আমার ব্রত। আমার উপর ন্যস্ত দায়িত্বগুলো সবার সহযোগিতায় সঠিকভাবে পালন করতে চাই।
Posted ১২:৪৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি