| সোমবার, ০১ জুন ২০২০
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ
পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়ায় চা-শ্রমিকের তালিকা প্রণয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের “চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি”- এর আওতায় ২০১৯- ২০২০ অর্থবছরে ৩৭৯ জন চা- শ্রমিকের তালিকা তৈরি করেছেন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতি চা শ্রমিক অনুদান হিসেবে পাবেন পাঁচ হাজার টাকা। তাই এ তালিকায় প্রকৃত চা শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে ভুয়া চা বাগান আর ভুয়া শ্রমিক দেখিয়ে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় চা শ্রমিকরা।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাবদ্দীন সমাজসেবা অফিসের যোগসাজশে কিছু চাবাগান মালিকের আত্মীয় স্বজন ও তার (মেম্বারের) পরিবারের সদস্যদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে অফিসে প্রদান করেছেন। এসব তালিকায় ওই ইউপি সদস্যের দুই স্ত্রী, শাশুড়ি, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীসহ ১০(দশ) জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তালিকায় অনুর্ভুক্ত করা হয়েছে বাজারের মুদীর দোকানদার, নাপিত ও কম্পিউটার কম্পোজ অপারেটরেরও নাম।
বিষয়টি নিয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আসিফ টি গার্ডেন, সানজিদ হাসান টি গার্ডেন, সেলিম চা বাগান, মিজানুর টি গার্ডেন নামে কয়েকটি চা বাগানের নাম দেখানো হলেও বাস্তবে এসবের অস্তিত্ব নেই। তবে মাহাবুবা টি গার্ডেন পাওয়া গেলেও সে বাগানে যাদের শ্রমিক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তারা কেউ চা শ্রমিক নয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আসাবদ্দীনের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভাই, মেম্বার হতে পারি, তাই বলে কি গরীব হতে পারি না। আমার পরিবারের সবাই চা শ্রমিক। তাই তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার(অঃদাঃ) আবদুর রাকিব বলেন, আমরা চা বাগান মালিকদের কাছে শ্রমিকদের নামের তালিকা নিয়েছি কোন মেম্বার চেয়ারম্যান এখানে সম্পৃক্ত নেই। তাহলে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ভুয়া চা বাগানের নাম আসল কিভাবে জানতে চাইলে সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, আমি এই অফিসে যোগদান করার আগেই এসব তালিকা নেওয়া হয়েছে, আগের অফিসার কিভাবে নিয়েছে তা আমি বলতে পারবোনা। তবে ওই মেম্বার প্রায় আমাদের অফিসে আসেন। অফিসের কারো সহযোগিতায় এগুলো হতে পারে। যেহেতু অভিযোগ পেয়েছি তাই ওইসব শ্রমিকের টাকা আপাতত বন্ধ থাকবে। আমরা আরো যাচাই বাছাই করে প্রকৃত চা শ্রমিকদের তালিকা করে তারপর টাকা দিব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলু বলেন, ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এর আগেও এরকম অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ১:৩৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ জুন ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি