| শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৯
ইসলাম ডেস্ক : রহমত বরকত মাগফিরাত তথা ইবাদতের দিন হচ্ছে জুমআর দিন। মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি মহান দিন। এ দিনটির সম্মান ও মর্যাদার জন্য ইহুদি-নাসারাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। পরবর্তীতে ইহুদিরা শনিবারকে আর খ্রিস্টানরা রোববারকে তাদের উপাসনার দিন নির্ধারণ করলেও আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহে মুসলিম উম্মাহ শুক্রবারকে ইবাদতের জন্য একটি মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ দিন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এ দিনের মর্যাদা জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-
কেন এদিনটি মর্যাদাপূর্ণ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- সূর্য উদিত হয় এরূপ দিনগুলোর মধ্যে জুমআর দিনটিই হলো সর্বোত্তম দিন। কারণ-
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এক ইয়াহুদি তাঁকে বলল, ‘হে আমিরুল মুমিনিন ! আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত আছে, যা আপনারা পাঠ করে থাকেন, তা যদি আমাদের ইয়াহুদি জাতির উপর অবতীর্ণ হতো, তবে অবশ্যই আমরা সেই দিনকে ঈদ হিসাবে পালন করতাম, তিনি বললেন, ‘কোন আয়াত’? সে বলল, ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ (সূরা মায়েদা : আয়াত ৩) হজরত ওমর বললেন, ‘এটি যে দিনে এবং যে স্থানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমরা জানি। তিনি সেদিন আরাফায় দাঁড়িয়েছিলেন আর সেটা ছিল জুমুআ’র দিন।’ (বুখারি)
এই দিনেই আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল; এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল (আবু দাউদ) এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল (মুসলিম) এই দিনে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল, এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল এবং এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছিল (আবু দাউদ)
এই দিনেই শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, এই দিনেই কিয়ামত হবে, এই দিনেই সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে (আবু দাউদ)
জুমআর দিন নিকটবর্তী ফেরেশতাগণ, আকাশ, পৃথিবী, বায়ু, পাহাড়, সমুদ্র সবই ক্বিয়ামত হবার ভয়ে ভীত থাকে।’ (মুয়াত্তা, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)
এ দিনের করণীয়
আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সূরা জুমআ : আয়াত ৯)
এ দিনের ফজিলত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মুমিনের জন্য জুমআর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন। তিনি আরও বলেন, “মহান আল্লাহ পাকের নিকট জুমআর দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের মত শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদা সম্পন্ন। (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
হে মুসলমানগণ! জুমআর দিনকে আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের জন্য (সাপ্তাহিক) ঈদের দিন হিসাবে নির্ধারণ করেছেন (جَعَلَهُ اللهُ عِيْدًا)। তোমরা এদিন মিসওয়াক কর, গোসল কর ও সুগন্ধি লাগাও।’ (মুয়াত্তা, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)
জান্নাতে প্রতি জুমআর দিনে জান্নাতিদের হাট বসবে। জান্নাতি লোকেরা সেখানে একত্রিত হবেন। সেখানে এমন মনমুগ্ধকর হাওয়া বইবে, যে হাওয়ায় জান্নাতিদের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরা তা দেখে অভিভূত হবে। অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে। (মুসলিম)
জুমআর রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে মারা যায়; আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেন।’ (তিরমিজি)
জুমআর দিন মসজিদে যাওয়ার ফজিলত
আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ইবাদাত হচ্ছে নামাজ। সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে জুমআর দিন। কেননা এ দিনে আল্লাহ তাআলা মানুষকে সবচেয়ে বেশি নিয়ামাত দান করেছেন। আর এ জন্যই আল্লাহ তাআলা এ দিনে মানুষের জন্য মর্যাদা সম্পন্ন একটি বিশেষ নামাজ দান করেছেন। যাকে আমরা জুমআর নামাজ হিসেবে জানি। এ দিনে নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামর হাদিস-
১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবতের গোসল করলো। অতপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি উট কুরবানি করল। আর যে দ্বিতীয় মুহূর্তে গেল, সে যেন একটি গরু কুরবানি করল। আর যে তৃতীয় মুহূর্তে গেলে, সে যেন একটি শিংওয়ালা দুম্বা কুরবানি করল। আর যে চতুর্থ মুহূর্তে গেল, সে যেন একটি মুরগি কুরবানি করলো। আর যে পঞ্চম মুহূর্তে গেল, সে যেন একটি ডিম কুরবানি করলো। অতপর যখন ইমাম সাহেব বের হয়ে আসেন তখন ফেরেশতাগণ জিকির শুনতে থাকেন। (বুখারি, মুসলিম)
২. হজরত আওস ইবনে আওস শাকাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন তার স্ত্রীকে গোসল করালো ও নিজে গোসল করলো। অতপর অন্যকে (মসজিদে যেতে) জলদি তাগিদ দিল এবং নিজেও সকাল সকাল পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল এবং ইমামের নিকটে বসলো ও কোনো অনর্থক কাজ না করে ইমামের খুৎবা শুনলো। তার প্রতিটি চলার পদক্ষেপের ছাওয়াব রোজা ও তাহাজ্জুদ সম্মিলিত এক বছরের সমান নেকি বরাবর হবে।’ (আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা যথা সময়ে প্রস্তুতি নিয়ে নামাজের জন্য যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জুমআর নামাজ না পড়ার ভয়াবহ পরিণাম
ধর্ম ডেস্ক
জুমআর নামাজ না পড়ার ভয়াবহ পরিণাম
জুমআর দিন সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিনের ফজিলত অনেক। তাই কোনো মুসলমানের উচিত নয় যে, জুমআর নামাজ থেকে বিরত থাকা। জুমআর দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ব্যতিত জুমআ’র নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। চার শ্রেণির লোক হল-
ক. ক্রীতদাস;
খ. স্ত্রীলোক;
গ. অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক;
ঘ. মুসাফির এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)।
জুমআ`র নামাজ না পড়ার পরিণাম-
সুতরাং বিনা ওজরে যে বা যারা জুমআর নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকবে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ পরিণাম। যা তুলে ধরা হলো-
ক. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমআ বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।
খ. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমআ ত্যাগকারী লোকেরা হয় নিজেদের এই খারাপ কাজ হতে বিরত থাকুক। (অর্থাৎ জুমআর নামা আদায় করুক), নতুবা আল্লাহ তাআলা তাদের এই গোনাহের শাস্তিতে তাদের অন্তরের ওপর মোহর করে দেবেন। পরে তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।
গ. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা এই রকম- যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমআ পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পিছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। যারা বিগত দিনগুলোতে ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক জুমআর নামাজ আদায় করতে পারেনি, সে সকল লোককে নিয়মিত জুমআর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।
সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা সবাইকে নিয়মিত জুমআর নামাজ আদায় করে হাদিসে উল্লেখিত ভয়াবহ লানত তথা বিপদ থেকে হিফাজত করুন। আমিন।
জুমআর দিনের সুন্নাতি আমল
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দুনিয়াতে মানুষের খুশির দিন তিনটি। দুই ঈদের দিন এবং জুমআর দিন। এ দিন গরিবের হজের দনি। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনে মুমিন মুসলমানের রয়েছে কিছু করণীয় সুন্নাত কাজ। যা এখানে তুলে ধরা হলো-
ক. জুমআর দিন নখ কাটা এবং গোঁফ ছাঁটা। (মিশকাত)
হাতের কাটার সুন্নাত নিয়ম-
ডান হাত : প্রথমে ডান হাতের শাহাদাত বা তজ্জনী আঙ্গুল, তারপর মধ্যমা, তারপর অনামিক এবং তারপর কনিষ্ঠ আঙ্গুলের নখ কাঁটা।
বাম হাত : বাম হাতের কনিষ্ঠ, তারপর অনামিকা, তারপর মধ্যমা, তারপর শাহাদাত, তারপর বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং সর্বশেষ ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ কাটা।
পায়ের নখ কাটার নিয়ম-
ডান পায়ের কনিষ্ঠ আঙ্গুল থেকে শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলিতে শেষ করা। বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি থেকে শুরু করে কনিষ্ঠাঙ্গুলিতে এসে শেষ করা। (শামায়েলে তিরমিজি)
খ. জুমআর দিন জামা-কাপড় ধোয়া এবং শরীর পাক-পরিষ্কার করে গোসল করা। (আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ)
গ. জুমআর দিন জুমআর নামাজের উদ্দেশ্যে মিসওয়াক করা এবং গোসল করা। (বুখারি)
ঘ. জুমআর দিন নামাজের উদ্দেশ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারি)
ঙ. জুমআর দিন নামাজের জন্য উত্তম পোশাক পরিধান করা। (আবু দাউদ)
চ. জুমআর দিন আগে-ভাগে প্রস্তুতি গ্রহণ করে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া। (আবু দাউদ)
ছ. শরীরে অযাচিত (বগল ও নাভির নিচে) লোম পরিষ্কার করা।
সুতরাং আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে উপরোক্ত কাজগুলো নিয়মিতভাবে আদায় করে সুন্নাতের উপর পরিপূর্ণ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সুরা কাহাফের তিলাওয়াত জুমআর দিনের বিশেষ আমল
সুরা কাহাফ। কুরআনুল কারিমের ১৮ নং সুরা। আয়াত সংখ্যা ১১০। মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। সুরাটি সম্পর্কে হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি হাদিস বর্ণিত আছে, ‘সম্পূর্ণ সুরাটি এক সঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আর এ কারণেই সুরাটির তিলাওয়াতের ফজিলত অনেক। তাছাড়া জুমাআর দিনে সুরাটির তিলাওয়াতের ফজিলতও অনেক। যা তুলে ধরা হলো-
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর (পরবর্তী) জুমআ পর্যন্ত নূর হবে।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমআ থেকে অপর জুমআ পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গোনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য হচ্ছে যে, কবিরা গোনাহ তাওবা করা ছাড়া ক্ষমা হয় না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামআর নামাজ আদায় করার আগে নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণ করে সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত জুমআর দিনে সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
জুমআর নামাজের কতিপয় নির্দেশনা
আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ট সৃষ্টি মানুষ। মানুষের কর্মকাণ্ডও সর্বোত্তম। আল্লাহ তাআলা এ কর্মকাণ্ডে দিয়েছেন কতিপয় বিধান। যার মধ্যে রয়েছে, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, রোজা রাখা, জাকাত দেয়া, হজ করাসহ ইত্যাদি বিষয়। নামাজের মধ্যে জুমআর নামাজ সর্বোত্তম। এদিনের নামাজকে গরিবের হজের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। জুমআর নামাজের কতিপয় বিধান জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-
জুমআর নামাজের নির্দেশ
হে ঈমানদারগণ! জুম
আর দিনে যখন তোমাদেরকে নামাজের জন্য ডাকা হয় তখন তোমরা (ছালাতের মাধ্যমে) আল্লাহ্র স্মরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা তা উপলব্ধি কর। অতঃপর যখন ছালাত শেষ হয়ে যায় তখন তোমরা (কাজ-কর্মের জন্য) পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো। (সূরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)
জুমআ যাদের ওপর ফরজ
রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চার ব্যক্তি ব্যতিত প্রত্যেক মুসলিমের ওপরে জুমআর ছালাত জামাআতের সঙ্গে আদায় করা ওয়াজিব; কৃতদাস-দাসী, মহিলা, নাবালেগ সন্তান ও রোগী
। (আবু দাউদ, মিশকাত)
জুমআর দিনে গোসল
জুমআর নামাজের জন্য উত্তমরূপে গোসল ও পবিত্রতা অর্জন করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, `যে ব্যক্তি জুমআর দিনে গোসল করবে, গোসল করাই (তার জন্য) উত্তম।’ (তিরমিজি)
জুমআর দিনে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা
রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুম
আর দিন গোসল করবে, সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করবে (নখ, গোঁফ, নিম্নাংশের চুল ইত্যাদি পরিষ্কার করবে) এবং তার নিজস্ব তেল ব্যবহার করবে অথবা তার গৃহে থাকা সুগন্ধি ব্যবহার করবে অতঃপর বের হবে এবং বসে থাকা দু`মুছল্লির মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাবে না। অতঃপর তার পক্ষে যত রাকাআত সম্ভব ছালাত আদায় করবে। এরপর যখন ইমাম সাহেব খুৎবা প্রদান করবেন তখন চুপ থাকবে, তার জন্য তার ও জুমআ থেকে পরবর্তী জুমআর মাঝের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ (বুখারি, মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)
জুমআর দিনে নতুন পোষাক
রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি জুমআর দিনে তার কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত দু
টি কাপড় ব্যতিত অন্য দু`টি কাপড় ব্যবহার করতে সক্ষম হয় তাহলে সে যেন তা ব্যবহার করে।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা আমাদের কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা মোতাবেক জুমআর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Posted ৩:১১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৯
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি