প্রথম দৃষ্টি ডেস্ক : | বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০
বুধবার সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের স্থান নির্বাচন,স্টেশন ও সেতু গোল চত্বর এলাকা পরিদর্শন করছেন রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, “যমুনা নদীর ওপরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশেই শিগগিরই শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ডুয়েল গেজ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ। আগামী ২৯ নভেম্বর ভার্চুয়ালী সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’বুধবার সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের স্থান নির্বাচন,স্টেশন ও সেতু গোল চত্বর এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন রেলমন্ত্রী এডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর সঙ্গে যে রেল লাইন রয়েছে সেটি সিঙ্গেল লাইনের। এই লাইনে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চালানো যায় না। ফলে অনেক সময় নষ্ট হয়। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়।’
তিনি বলেন, ‘জাপানের জাইকার অর্থায়নে ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন রেল সেতুটির বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। নতুন রেল সেতুতে ডাবল লাইন রাখা হয়েছে। একসঙ্গে দুই দিক থেকে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। রেল সেতুর ওপর দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সেতুর ওপর দিয়ে দ্রুত গতিতে রেল যোগাযোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ হবে এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার আরও উন্নয়ন ঘটবে।
এ সময় সদর আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলমসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, যমুনার ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর ৩শ’ গজ উত্তরে (উজানে) নতুন রেল সেতুটি নির্মাণ হবে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হলেও সংশোধিত প্রকল্পে সময়সীমা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। যদিও ডাবল লাইন হওয়ায় সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার বিবেচনা করছে রেলওয়ে।
একইসঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে বঙ্গবন্ধু সেতুর রেললাইন তুলে নেওয়া হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে দিনে ৪৪টি ট্রেন চলাচল করে। সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় সেতু পার হতে ট্রাফিক সিগন্যালে পরীক্ষার জন্য বেশ খানিকটা সময় নষ্ট হয়। ওজন সীমাবদ্ধতার কারণে এই লাইনে ভারী পণ্যবাহী ট্রেন চলতে পারে না। এ সেতুতে ট্রেনও পূর্ণ গতিতে চলতে পারে না। ঈদের সময় শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে ট্রেন। নতুন ডাবল লাইন সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। রাজধানীর সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কামরুল আহসান জানান, মূল সেতুটি দুটি প্যাকেজের আওতায় বানানো হবে। নির্মাণ ব্যয়ের ৭২ শতাংশ ঋণ সহায়তা দেবে জাপান (জাইকা)। সেতুটির পূর্ব অংশ নির্মাণ করবে ওবায়শি কর্পোরেশন, টিওএ কর্পোরেশন এবং জেএফই। এই অংশের জন্য ব্যয় হবে ৬ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। আইএইচআই এবং এসএমসিসির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে পশ্চিম অংশ। এই অংশে ব্যয় হবে ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাইট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা প্রকল্প স্থানে আসতে শুরু করেছেন।
Posted ১২:১৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি