| শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ
দশটিরও বেশি মামলার আসামী ড্রেজার চক্রের ডন হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত শেখ ফরিদ (৩৮)কে গ্রেফতার করেছে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ। অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনে পাথর উত্তোলনের লাইনম্যান থেকে গডফাদার হয়ে উঠেছিল সে। বৃহস্পতিবার বিকেলে শালবাহান ইউপির মাঝিপাড়া এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয় তাকে। গত ২৬ জানুয়ারি ভজনপুর এলাকায় নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন পুনরায় চালুর দাবিতে অবরোধের নামে পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাংচুর ও নিহত এক পাথর শ্রমিকের ‘হত্যা’ মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ দশের অধিক অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন সংশ্লিষ্ট মামলা রয়েছে।
অতি অল্প দিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ গল্পকে হার মানায় শেখ ফরিদ। সামান্য পাথর শ্রমিক থেকে এখন কোটি টাকার মালিক। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে নদী ও সমতল ভূমিতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনে পাথর উত্তোলনের অবয়ারণ্য হয়ে উঠে এ এলাকটি। এ অবৈধ ড্রেজার মেশিনে পাথর উত্তোলনকারী চক্রের ডন হয়ে উঠে সে। প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে পাথর শ্রমিক ফরিদ কোটিপতি বনের মোড়ল হয়ে উঠে। সে শালবাহান ইউনিয়নের পেদিয়াগছ এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে। মাঝিপাড়া ও শালবাহানের বিভিন্ন এলাকায় চলা বোমা মেশিন নিয়ন্ত্রণ করতো।
স্থানীয়বাসীদের কাছ থেকে জানা যায়, ড্রেজার স¤্রাট শেখ ফরিদ এখন প্রায় ৫০ কোটি টাকার মালিক। রয়েছে ২০ একর জমির চা বাগান, ৩ টি ট্রাকসহ কোটি টাকার পাথরের ব্যবসা। সম্প্রতি একটি চা কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন। ডাহুক ব্রিজের পাশে বনবিভাগের জমি অবৈধভাবে দখল করে দিন দুপুরে চালিয়ে যাচ্ছেন তার পাথর ব্যবসা। গত বছর জুলাইতে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার হিসেবে মোহাম্মদ ইউসুফ আলী যোগদান করার পর বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনসহ মাটি খনন করে সব ধরণের পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারপরও ওই চক্রটি পাথর উত্তোলনের পায়তারা করছিল।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে ড্রেজারের হোতারা পুনরায় পাথর উত্তোলন করার দাবিতে সাধারণ শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। এতে করে অবরোধে বাধা দিলে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নিহত হন জুমারউদ্দিন নামে এক পাথর শ্রমিক। আহত হয় পুলিশ ও র্যাবসহ অর্ধশতাধিক। টানা পাঁচ ঘন্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই উপ-পরিদর্শক এসআই লুৎফর রহমান ও শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে ‘সরকারি কাজে বাঁধা, পুলিশ-র্যাবের উপর হামলা ও পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ‘হত্যা’ অভিযোগে দুইটি মামলা করেন। এর একটি মামলায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়, অন্যটিতে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয় চার থেকে পাঁচ হাজার। পুলিশ জানায়, ওই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বোমা মেশিন চক্রের মূল হোতা শেখ ফরিদকে গ্রেফতার করা হয়।
Posted ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি