নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
বুধবার সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির পতাকা বৈঠক
বাংলাদেশী এক প্রেমিকের প্রেমের টানে রাতের অন্ধকারে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেও প্রেমিকের হাত ধরতে পারলো না ওই প্রেমিকা। তার আগেই পুলিশের হাতে আটক হয়ে গেলেন সতের বছর বয়সী প্রেমিকা খুসনামা। ওই তরুণী ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপুকুর থানার হারিয়ানী গ্রামের ইসরাইল হোসেনের কন্যা। দু’দেশের সীমান্ত আইনী জটিলতার কারণে ঘর বাঁধা হলো না প্রেমিক যুগলের। বাংলাদেশি প্রেমিকের নাম আব্দুল লতিফ রকিব (২১)।
জানা যায়, গত বুধবার গভীর রাতে ভারতের মুড়িখাওয়া গ্রাম হতে এসে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা নদী মহানন্দা পার হয়ে ঈদগাহ বস্তি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে স্থানীয় জৈনক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে তার বাড়িতে উঠলে তা গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরে মডেল থানা পুলিশ মেয়েটিকে থানা হেফাজতে আনা হয়।
এদিকে প্রেমিকা খুসনামা বাংলাদেশে আসার খবর পেয়ে প্রেমিক রকিব দেখা করতে এসে জানতে পারে তাঁর প্রেমিকাকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পর প্রেমিক হাউমাউ করে কেঁদে বুক ভাসিয়ে থানায় ছুটে যান রাকিব। পরে তারা দুজনে বিয়ে করার দাবি করলেও প্রমাণ দেখাতে পারেননি। মেয়েটি তার প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ ও কান্নাকাটি করে।
প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে যেভাবে
সীমানা পার হয়ে খুসনামার বাড়িতে প্রথম আশ্রয় নিয়ে কাজের সন্ধানে ভারতের কেরালা প্রদেশের হাজী আলী নামের এক ব্যক্তির হোটেলে সেখানে খুসনামার ভাইয়ের সাথে কাজ করতেন রকিব। সেখানে করেন ৮ থেকে ১০ বছর। কেরালায় কাজ করার সময় পূজার ছুটিতে খুসনামার বাড়িতে এসে থাকতো। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর গত বছর দুই আগে মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই প্রেমকে জীবনের বন্ধনে পরিণত করতে তেঁতুলিয়া ডাঙ্গীবস্তির সীমান্তের ৪৪৪ মেইন সাব পিলার-২ অতিক্রম করে গভীর রাতের অন্ধকারে একাকী খুসনামা ছুটে আসে বাংলাদেশে। কিন্তু এসেও হলো না জুটি বাঁধা। পুলিশের হাতে আটক হয়ে গেল সে। প্রেমিকা আটকের খবর শুনে যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো প্রেমিকের মাথায়। দু’দু চার চোখে এখন ঝরছে বাধভাঙ্গা কান্না।
ভারতীয় ওই তরুণী খুসনামা জানান, তাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। ওই আমার জীবন-মরণের সাথী। জানি না রকিবকে না পেয়ে বাঁচবো কীনা।
মডেল থানার ওসি আবু ছায়েম মিয়া জানান, বুধবার রাতে সীমান্ত নদী মহানন্দা পেরিয়ে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশে প্রবেশের পর আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসি। জানতে পেরেছি, তার সাথে ছেলেটির বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। মেয়েটি যেহেতু বয়সে নাবালিকা, তাই আমরা মেয়েটির অভিভাবকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। সেই সাথে বিষয়টির সাথে ভিন্নকিছু জড়িয়ে আছে কীনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম ফজলে রাব্বী বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির পতাকা বৈঠক হয়েছে। আটক মেয়েটির বায়োডাটা বিএসএফ সংগ্রহ করেছে। মেয়েটির দেওয়া তথ্য যদি সঠিক হয়, তাহলে বিএসএফ তাকে ফেরত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
Posted ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি