নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
দেশের মানচিত্রের সর্বোত্তরের সীমান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায় অনুষ্ঠিত হলো অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য এক ব্যাতিক্রমী হেলথ ক্যাম্প।
বুধবার (২২ জানুয়ারি ২০২০) বাংলাবান্ধা দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে আয়োজিত উক্ত হেলথ ক্যাম্প ও সেমিনারের আয়োজক স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত তেঁতুলিয়া।
এতে তিন শতাধিক রোগী বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ সেবা ছাড়াও শ্বাসের ব্যায়াম, খাদ্যাভাস ও বিকল্প জীবিকা সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান লাভ করে যাকে বলে ‘পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশনথ। তীব্র শীত উপেক্ষা করে প্রচুর সংখ্যক রোগী আসেন এই হেলথ ক্যাম্পে যাদেরকে বিনামূল্যে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা পরিমাপ (স্পাইরোমেট্রি), ব্লাড প্রেশার, ব্লাড সুগার ইত্যাদি পরীক্ষা তাৎক্ষণিক রিপোর্ট প্রদান করাসহ বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। হেলথ ক্যাম্পের শুরুতে পাথর শ্রমিকদের নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ধুলোবালি তথা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ কীভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করছে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রজেক্টরে তা সচিত্র তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আতাউর রহমান কাবুলের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন রংপুর মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও বাংলাদেশ প্রাইমারি কেয়ার রেসপিরেটরি সোসাইটির (বিপিসিআরএস) সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এম রওশন আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এম. আতিকুজ্জামান শাকিল, ডিজার হোসেন বাদশাহ, ফেরদৌস আলম লিটন, রনি মিয়াজী, মোবারক হোসেন, রবিউল ইসলাম রতন প্রমূখ। সেমিনার শেষে ২০ সদস্যের মেডিকেল টিম দিনব্যাপি হেলথ ক্যাম্পটি পরিচালনা করেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. এস এম রওশন আলম বলেন, শুধু চিকিৎসা নিয়ে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের রোগীরা সুস্থ থাকতে পারে না। বরং অ্যাজমা ও শ্বাষকষ্ট রোগ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে মাংসপেশি নমনীয় ও প্রসারিত করার ব্যায়াম, কাঁধের ব্যায়াম, পায়ের ব্যায়াম, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাংসপেশির শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম ইত্যাদি শিখে বাসায় প্রাকটিস করলে রোগীরা অনেক ভালো থাকেন। এছাড়াও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, ইনহেলারের সঠিক ব্যবহার, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন, বিকল্প জীবিকা সম্পর্কে জানাও খুব জরুরী যাকে বলে পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন।
জাগ্রত তেঁতুলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আতাউর রহমান কাবুল বলেন, হতদরিদ্র মানুষকে উন্নত চিকিৎসা দিতে জাগ্রত তেঁতুলিয়া কাজ করে যাবে। তবে তিনি রোগ হবার আগে প্রতিরোধের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দেবার আহবান জানান।
বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন বলেন, অসহায়-দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মতো ভালো ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে আমি সদা প্রস্তুত।