| বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০
দেলোয়ার হোসেন,ময়মনসিংহ থেকেঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর, মঠবাড়ী ও সদর ইউনিয়ন এলাকায় লেয়ার মুরগীর খামারে অজ্ঞাত রোগে হাজার হাজার মুরগি মরে যাচ্ছে।রোগ নির্ণয় করতে না পারায় খামারে মুরগির মৃত্যু থামছে না। অনেক খামারে লাখ লাখ টাকার মুরগি মরে যাওয়ায় পথে বসেছেন প্রল্ট্রি খামার মালিকরা।
উপজেলার মোক্ষপুর, মঠবাড়ী ও সদর ইউনিয়ন এলাকার লেয়ার মুরগীর খামার গোলোতে গত এক মাসে অজ্ঞাত রোগে বেশ কয়েকটি পোলট্রি ফার্মের সব মুরগি মরে সাফ হয়ে গেছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। তাই এ শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি দেখা দিয়েছে। অথচ কোনো খামারি এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা মুরগির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলতে পারছেন না।
জানা যায়, উপজেলায় ৪৫০টি লেয়ার ও ৫শ’র অধিক ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে। ভাইরাসজনিত কারণে কয়েক দিনের মধ্যে অনেকগুলো খামারির মুরগি মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে মঠবাড়ী ইউনিয়নের বাদামীয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ১হাজারের অধিক, সদর ইউনিয়নের চিকনা গ্রামের লিটন মিয়ার ১হাজার, একই গ্রামের আঃ মান্নানেরও ১হাজারের অধিক, সদর ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ’র ১৫’শ, মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরি খারহর গ্রামের হারুনুর রশিদের ১৫’শ, একই গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ১২০০’শ, একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার ১ হাজারের অধিক লেয়ার মুরগী মারা যায়।
মোক্ষপুর ইউনিয়নের নিজবাখাইল গ্রামের রূপসী বাংলা এগ্রো কমপ্লেক্সের মালিক মাও. ইব্রাহীম খলিল জানান, ২০০৯ সালে ২হাজার লেয়ার মুরগি নিয়ে খামার শুরু করেছিলেন। প্রথম থেকেই সীমিত লাভ দিয়ে ব্যবসা করে আসলেও ধুকে ধুকে চলে আসছিল।পরের বছর ফার্মের পরিধি বাড়িয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার লেয়ার মুরগির খামার করেন। এর মধ্যে ২ হাজারের অধিক মুরগি ডিম দিচ্ছিল। এভাবেই ২০১৩ সালের দিকে ফার্মের পরিধি আরো বাড়িয়ে আরো দুইটি নতুন সেড নির্মাণ করে ৪টি সেডে প্রায় ৯ হাজারের অধিক লেয়ার মুরগীর ফার্ম চালিয়ে আসছিলেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে অজ্ঞাত রোগের হানায় গত কয়েক দিনে তার প্রায় ৬ হাজার মুরিগ মারা গেছে। ফলে বর্তমানে লেয়ার খামারে মুরগী না থাকায় ইব্রাহীম খলিলের পুজিসহ সব শেষ হয়েগেছে বলে দাবী করেছেন তিনি।
ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিকনা গ্রামের স্বাধীন পোল্ট্রি ফার্মের মালিক নজরুল ইসলাম ঢালী ২ হাজারের অধিক লেয়ার মুরিগ পালন করে আসছিলেন। এতে প্রায় ২ হাজার মুরগি ডিম দিচ্ছিল। একই রোগে গত ১৫ দিনে তার প্রায় এক হাজারের অধিক মুরগি মারা গেছে।
একদিকে অঘোষিত লগডাউনে মুরগীর ডিমের বাজার ছিল মন্দা, অপরদিকে খাদ্যেরও ছিল তীব্র সংকট। তার ওপরে আবার অজ্ঞাত ভাইরাসের হানায় খামারীরা আজ পুজি হারিয়েছে। ব্যাংক, এনজিও থেকে অনেক খামারী লোন নিয়ে ব্যবসা করলেও এখন ঋণ শোধের চিন্তার কাটছে তাদের দিন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুনুর রশিদ জানান, খোজ খরবর নেওয়া হচ্ছে, খামারিদেরকে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তবে উপজেলার সকল খামারীদের ডাটাবেজ তৈরী করা হয়েছে। প্রান্তিক পর্যন্ত প্রাণী সম্পদ অফিসের সেবা পৌছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি।
Posted ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি