ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতে বাংলাদেশের ভিসা অফিস ছিলো। তবে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস থেকে ভিসা দেওয়া হতো। কিন্তু সেখানকার পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ ছিল। ভিসার জন্য দীর্ঘ লাইন হতো। একদিন আগে থেকেই লাইন দিতে হতো। দূর থেকে যারা যেতেন তাদেরকে থাকা খাওয়া লাইনে দাঁড়ানো ছিল বড় একটা হ্যাপার ব্যাপার। দালালদেরও উৎপাত লেগে থাকত। পরবর্তীতে সেই ভিসা অফিস চলে যায় সল্টলেকে। বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন দায়িত্ব দেয় একমাত্র আউটসোর্সিং সংস্থা ‘ডু ডিজিটাল গ্লোবালকে’। তারাই এবার শিলিগুড়িতে চালু করল আরেকটি ভিসার আবেদন কেন্দ্র। এতে দীর্ঘ দিনের দাবি এবার পূরণ হল।
বুধবার (৬ এপ্রিল) এই কেন্দ্রের উদ্বোধন হয় সেবক রোডের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে। এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঝাঁ-চকচকে অফিসটি কলকাতা সল্টলেকে মতোই করা হয়েছে। যদিও শিলিগুড়ির অফিসটি আকারে একটু ছোট।
একই পরিষেবা নিয়ে রাজ্যে তারা দুটি আধুনিক ভিসা অফিস খুলল। ভিসা পাওয়ার নিয়ম একই রয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের জন্য কোনও ফি নেবে না বাংলাদেশ সরকার। তবে একমাত্র স্বীকৃত সংস্থা দায়িত্ব নিয়েছে তারা পরিষেবা ফি নেবে ৮২৫ টাকা। শিলিগুড়িতে এরসঙ্গে জুড়বে ৪০০ টাকা কুরিয়ার সার্ভিস বাবদ। আর কোন টাকা দিতে হবে না। ছবি সহ ভিসার আবেদনপত্র ঠিক থাকলে এই টাকাতেই ভিসা পাওয়া যাবে। পরিস্থিতি বুঝে আবেদনকারীর বাড়ির ঠিকানায় ভিসা সমেত পাসপোর্ট পৌঁছে যাবে।
ওইদিন ভিসা আবেদনটি উদ্বোধন এসেছিলেন সোনালী ব্যাংকের ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজের রওশন জাহান। তিনি বলেন, একমাত্র অফিসিয়াল এই ‘ডু ডিজিটাল গ্লোবাল’ বাংলাদেশের ভিসা দেয়। সোনালী ব্যাঙ্কের মাধ্যমেও ভিসার আবদন জমা দেওয়া যাবে। শিলিগুড়িতে এদিন থেকেই আবার আগের মতোই সোনালী ব্যাঙ্ক যাত্রা শুরু করল।
ভারতরীয় পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় দৈনিক আজকাল পত্রিকার শিলিগুড়ি প্রতিবেদক গিরিশ মজুমদার বলেন, আমরা খুবই আশায় ছিলাম যে বাংলাদেশের ভিসা অফিস শিলিগুড়িতে হবে। সেই আশা পূরন হয়েছে। আগে উত্তরবঙ্গের মানুষ কষ্ট করে কলকাতা,গোয়াহাটি বা ত্রিপুরা গিয়ে ভিসা করতে হতো। এখন খুব কাছাকাছি হওয়ায় সবাই তা অনায়স করতে পারবে বাংলাদেশী ভিসা।
এ বিষয়ে শিলিগুড়ি ব্যাংশ শাখা ম্যানেজার মোল্লা শামীম আক্তার বলেন, আবেদন জমা দেওয়া যাবে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটের এই কেন্দ্র ছাড়াও আমাদের ব্যাঙ্কের শিলিগুড়ি শাখায়। এখন থেকে আর দালালের উৎপাত, লাইনে দাঁড়ানোর হয়রানি ভোগ করতে হবে না। ‘ডু ডিজিটাল গ্লোবালের কর্ণধার, শিভাজ রাই বলেন, আমরা সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করি। বাংলাদেশের ভিসা দিয়ে থাকি আমরাই। কলকাতার মতো একই নিয়মে সমস্ত ধরনের ভিসা মিলবে। আবেদন করার এক সপ্তাহ থেকে ১২ দিনের মধ্যে ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।’ এদিকে ভিসা কেন্দ্রটি খোলায় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, আমদানি রপ্তানিকারক, পর্যটন সংস্থার কর্তারা খুশি।
ভারতের শিলিগুড়ি ফুলবাড়ি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি বিশ্বজিৎ ভৌমিক বলেন, এতদিন আমাদের দালালদের ভরসায় থাকতে হতো। অনেক টাকা খরচ হতো। পাসপোর্ট হারানোর ভয়ও ছিল। দীর্ঘ বছরের দাবি আমাদের পূরণ হল। ফুলবাড়ি, চ্যাংরাবান্ধা, হিলি অভিবাসন কেন্দ্র সহ এনজেপি–ঢাকা রেলপথের জন্য এই ভিসা কেন্দ্রটি বড় সহায়ক হয়ে উঠবে।