এস কে দোয়েলঃ | সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
সাংবাদিকরা তো সবার খবরই রাখেন। সবার খবর পৌছে দিতে ব্যস্ত থাকেন। দিন-রাত খাওয়ার কথাটাও মনে থাকে না। মনে থাকলেও অনেক সময় হয়ে উঠে না। অথচ সেই সাংবাদিকদের খবর কজন রাখেন। রাখতেও চান না। কি দরকার? দুই পয়সার সাংবাদিকের প্রয়োজন হয় শুধু নিজের স্বার্থে। নিজেদের স্বার্থে। অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখেও সময়ের মূল্য দিতে চান না কেউ।
আহা কী কষ্ট! পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে করতে কেটে যায় দিনরাত।যখন ঘটনা, তখনই সংবাদের ব্যস্ততা।কখনো কখনো খাবার ছেড়ে ছুটতে হয়।আবার কখনো বেলা গড়িয়ে গেলেও খাবার খাওয়ার সময় পর্যন্ত মিলে না। এদিকে পরিবার অপেক্ষার প্রহর কাটাতে থাকেন, কখন তিনি আসেন। কখন বাজার পাঠাবেন। সন্তানরাও অপেক্ষায় থাকে, কখন বাবার সান্নিধ্য মিলবে। কখন এক সাথে খাবে, বাজারে যাবে, প্রয়োজনীয় জিনিস কিনবে? অপেক্ষা আর শেষ হয় না।
সাংবাদিকের স্ব-র্ধমিনী ফোন দিয়েই যাচ্ছেন। কখনো ওয়েটিং,কখনো ব্যস্ত আবার কখনো বন্ধ। আবার কখনো যখন ফোন কল রিসিভ হয়,হ্যালো কোথায় তুমি? ওপাশ থেকে ক্লান্তিময় সাংবাদিকের কন্ঠ-ব্যস্ত আছি। পরে বাজার পাঠাচ্ছি,জরুরী নিউজে আছি, নিউজটা পাঠিয়েই বাজার পাঠাচ্ছি। সময় মতো নিউজ না পাঠালে অফিস নিউজটি ধরবে না।
আহা কী ব্যস্ততা।অপরের খবর রাখতে, খবর পাঠাতে কীনা ব্যস্ততা। অপরের জন্য সময়, অর্থ ব্যয় করতে করতে নিজের পরিবারের জন্য সময় হয়ে উঠে না। ঘড়ির কাটা চলতে থাকলেও অনেক সময় বাড়িতে বাজার পৌছে না। নিজের খাওয়ার সময় হয়ে উঠে না। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফান, বন্যা-জলোচ্ছাস সব প্রতিকুলতার মধ্যেও অন্যের খবর নিতেই ব্যস্ত থাকেন সাংবাদিক।
কত ধরণের নিউজ! ধর্ষণ, নির্যাতন, প্রতিবাদ, মূল্যবৃদ্ধি, অনাহারি,কৃষকের উৎপাদিত মূল্যের ন্যায্য মূল্য না না পাওয়া, হরতাল-অবরোধ, ঘুষ-দুর্ণীতি, হত্যাসহ কত মানুষের খবর? সব খবরই রাখে সাংবাদিক। অথচ কারো সময় হয় না সাংবাদিকের খবর নেয়ার। যে মানুষটি সমাজের জন্য, দেশের জন্য, মানুষের জন্য দিনরাত লড়াই করে চলেছেন, অথচ তার খবর রাখেন না কেউ!
Posted ২:৪২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি