তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা | রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ধর্ষিত সেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জয়নাব (৩৫) এক ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। রবিবার রাতে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে এ সন্তানের জন্ম দেন। অসহায় এ গৃহকর্মী মা হলেও বাবা হতে চাচ্ছে না ধর্ষক মাহবুব আলম আবু। ঘটনাটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ভেলকুগছ গ্রামের। সন্তান প্রসবের পর হতভাগা এ শিশুর পিতৃত্ব অধিকার নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সদ্যজাত শিশু কী পাবে পিতৃত্ব পরিচয়, পাবে কী পিতার আলিঙ্গনের আদর ¯স্নেহ! হাজার প্রশ্ন উঠলেও ক্ষীন হয়ে উঠেছে স্বপ্ন।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীর চাচা জাহিদ জানান, রোববার রাতে তার প্রসব ব্যথা উঠলে পঞ্চগড়ে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। ভোরে ভোরে সে ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। মা-শিশু দুজনই সুস্থ্য রয়েছে। কিন্তু ভূমিষ্ঠ এ শিশু খুবই অভাগা। যে তার জন্মদাতা, সে ও তার পরিবার মেনে নিতে চাচ্ছেন না। তারা সন্তান জন্মের আগেই প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করছিল। পরে থানায় মামলা করলে ধর্ষক আবু কারাগারে রয়েছে। বাচ্চা হওয়ার পর তারা কোন যোগাযোগ করেনি। বরঞ্চ তারা এ থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন প্রকার চেষ্টা চালাচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলা শালবাহান ইউনিয়নের মুহুরীহাট ভেলকুগছ গ্রামের উপজেলা প্রকৌশলীর সার্ভেয়ার (অব.) জয়নাল আবেদীনের বাসায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে গৃহকর্মীর কাজ করছিলেন ওই নারী। এ সুযোগে বাড়ির মালিকের ছেলে আবু তার সাথে একাধিকবার ধর্ষণে অন্ত:সত্তা হয়ে পড়ে গৃহকর্মী তরুণী। গত ১৯ নভেম্বর মেয়েটি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ৮ মাসের অন্ত:সত্ত¡া হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। খবরটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর মেয়ের বাবা জয়নাল বিয়ের প্রস্তাব দিলেও কাজ হয়নি। পরে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯ (১) ধারায় থানায় মামলা করলে দুদিন পর র্যাবের হাতে আটক হন অভিযুক্ত আবু। এখন সে হাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, সদ্যজাত শিশুর পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করে মা ও শিশুকে পরিবারে মেনে নেয়া। তা নাহলে এক অসহায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারীর সাথে উপর্যুপরী ধর্ষণের দায়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
তবে অভিযুক্ত আবুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার জয়নাল আবেদীন জানান, ঘটনার পর থেকেই আমি ছেলের সাথে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে ঘরে তুলতে রাজী ছিলাম। এখনো রাজি আছি। কিন্তু সমঝোতায় আসতে পারিনি। বরঞ্চ তারা আমার ছেলেকে আসামী করে থানায় মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
Posted ১২:৫০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি