তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : | মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১
ছবি-প্রথম দৃষ্টি
পুরো নভেম্বর জুড়েই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় শীত পোহাচ্ছে হিমশীতলের অঞ্চল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। নভেম্বর জুড়েই বিরাজ করা ঠান্ডায় জর্জরিত সীমান্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। ক্রমশ কমছে তাপমাত্রার পারদ। ১১ ঘরে নেমে এসেছে তাপমাত্রা। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিস। ডিসেম্বরে শৈতপ্রবাহের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
তেঁতুলিয়া হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের অধ্যুষিত হওয়ায় সবার আগে শীত নামে এখানে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় পরশে পরশে অনুভূত হয় শীতের প্রকোপ। এবার দিনে সূর্যের আলোয় উষ্ণতা ছড়ালেও শীতের চাদরে ঢাকে পড়ন্ত সন্ধ্যা। শিরশির করে স্যুইয়ের মতো প্রবেশ করে কনকনে ঠান্ডা। রাত যত গভীর হয়, শীতের মাত্রা বাড়তে থাকে। কুয়াশা আর শীতল শিশিরে পরশে লেপকাঁথায় শরীর ঢাকতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। ভোর সকালে তাদের গায়ে থাকে গরম কাপড়। বিভিন্ন যানবাহনকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা তাপমাত্রা থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে শুরু হয় ঠান্ডা বাতাস। রাতের বেলায় টিনের চালে টুপটুপ করে শিশির পড়ার শব্দ শোনা যায়। সমতলের চা বাগানের পাতায় পাতায় কুয়াশা জমতে দেখা যায়। সাঝ সকালে ঘাসের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করলে ভিজে যায় কাপড়-চোপর।
জাহেরুল, সোনা মিয়া, জামাল উদ্দিনসহ কয়েকজন চা শ্রমিক জানান, আমরা ভোরে ভোরে চা পাতা তোলার কাজ করি। পাতা কাটতে গেলে কাপড় ভিজে গিয়ে বেশ ঠান্ডা লাগা শুরু করে। পাতায় পাতায় শিশির, যেন বরফ মনে হয়।
সিহাব, পার্থ ও সাব্বির নামের কয়েকজন পর্যটক জানান, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় এখানে বেশ শীত অনুভব হচ্ছে। বেশ উপভোগ্য লাগছে। কারণ, ইটপাথরের যানজটের শহরে এখনো যেখানে ফ্যান চালাতে হয়, সেখানে এই অঞ্চলে ঠান্ডা লাগছে।
এদিকে শীত আসার সাথে সাথে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বয়স্ক মসলিম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শীতটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। এখন যারা আমরা বয়স্ক, তাদের জন্য শীতটা অভিশাপেরও বটে।
শীতের গরম কাপড় দোকান বসছে ফুটপাতগুলোতেও। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে গরম কাপড় কিনতে দেখা যায়।
উপজেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শীত বাড়ছে। নভেম্বরের বেশিরভাগ দিনই সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে শীতের তীব্রতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
Posted ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১
দৈনিক প্রথম দৃষ্টি | প্রথম দৃষ্টি